প্রায় তিন বছর ধরে মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাচ্ছে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ। ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন ইউনিটে নতুন কমিটি দেয়া হলেও ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের সম্মেলনের খোঁজ নেই।
সাংগঠনিক জটিলতাসহ নানা কারণে প্রত্যাশিত সম্মেলনের দীর্ঘসূত্রিতা বাড়ছে বলে জানিয়েছে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের একাধিক সিনিয়র নেতা। চলতি বছরের এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের সম্মেলনের কথা থাকলেও, তখন কেন্দ্রীয় কমিটি পূর্ণাঙ্গ না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত আটকে যায়।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ২৯ নভেম্বর রাতে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়। এ ঘটনায় আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে ৩০ নভেম্বর স্থগিত করা হয় ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি। তখন ফুয়াদ হাসান পল্লব সভাপতি ও সাকিব হাসান সুইম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এ ঘটনায় সাধারণ সম্পাদকসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করা হয়।
এ ঘটনার দীর্ঘ ৩ বছর পর ২০১৬ সালের ১৭ নভেম্বর তিন মাসের জন্য নুর আলম ভূইয়া রাজুকে আহ্বায়ক করে একটি আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন। এরপর ২০১৭ সালের ২২ জানুয়ারি দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় ঢাকা কলেজ শাখার আহ্বায়কসহ ১৯ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। তিন মাসের আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে এখনও চলছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ঢাকা কলেজ ইউনিট। বর্তমানে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটিতে ২৮ জন যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৯০ জন সদস্য রয়েছে।
এদিকে দীর্ঘদীন সম্মেলন না হওয়া এবং সিনিয়র অনেক নেতাকর্মীরা কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান না পাওয়ায় রাজনীতির জীবনে হতাশা নেমে এসেছে বলে অনেক সিনিয়র নেতার অভিযোগ।
ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রাসেল মাহমুদ বলেন, দীর্ঘদিন রাজনীতি করেও কেন্দ্রীয কমিটিতে পদ পায়নি, বঞ্চিত হয়েছি। তিন মাসের কমিটি দিয়ে প্রায় তিন বছর সংগঠন চলছে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী দিনের নেতৃত্ব তৈরি হওয়ার প্রক্রিয়া স্থবির হয়ে পড়বে। দ্রুত সম্মেলনের মাধ্যমে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের নতুন কমিটি দেওয়া উচিত।
আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল উদ্দীন মাহী বলেন, ছাত্রলীগের ঢাকা কলেজ ইউনিট একটি ঐতিহাসিক সংগঠন। ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে যেকোনো আন্দোলন-সংগ্রামে এই ইউনিটের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ রয়েছে। দীর্ঘদিন সম্মেলন হয় না। আমরা আশাবাদী অচিরেই সম্মেলন হবে। তবে সাংগঠনিক জটিলতায় হয়তোবা সম্মেলন পিছিয়েছে। আমরা যেকোনো সময় সম্মেলনের জন্য প্রস্তুত। তবে আমরা চাই, ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠানের কমিটি যেন সম্মেলনের মাধ্যমেই হয়।
এদিকে জানা গেছে, স্থানীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এমপির সঙ্গে কথা বলে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক শীঘ্রই সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করবেন।