যারা খাদ্যে বিষ প্রয়োগ করে লক্ষ লক্ষ মানুষকে তিলে তিলে মারছে আবার যারা নকল ঔষধ প্রস্তুত করে পয়জনিং-এর মাধ্যমে ধীরে ধীরে মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে, তারা উভয়ই হত্যাকারী।
শনিবার (৬ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাব চত্বর চ্যারিটি মানব কল্যাণ সোসাইটি অব বাংলাদেশ কর্তৃক আয়োজিত ‘খাদ্যে ভেজাল ও নকল ঔষধ প্রস্তুতকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি’ নিয়ে করা মানববন্ধন কর্মসূচীতে এমন মন্তব্য করেন লেখক, গবেষক, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবুল মকসুদ বলেন, আজকে সমাজের খাদ্যে ভেজাল ও নকল ঔষধ প্রস্তুতকারীর সাথে যারা জড়িত তারা ফৌজধারী অপরাধে অভিযুক্ত। তাদের বিচারের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড প্রদান করতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এ ব্যাপারে কঠোর হতে হবে। অন্যথায় এই ধরনের অপরাধ থেকে জাতির মুক্তি অসম্ভব হয়ে পড়েছে। কারণ খাদ্যে ভেজাল ও নকল ঔষধ প্রস্তুতকারী নিজের ব্যক্তিগত মুনাফা লাভের আশায় আজ পুরো মানবজাতিকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।
মানববন্ধনে প্রধান বক্তা বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিষ্ট ফোরাম (বোয়াফ) সভাপতি কবীর চৌধুরী তন্ময় বলেন, খাদ্যে ভেজাল ও নকল ঔষধ প্রস্তুতকারী ব্যক্তি দেশ ও জাতির শত্রু। তারা ব্যক্তিগত মুনাফার লোভে এই দেশের জনসাধারণকে পয়জনিং এর মাধ্যমে ধীরে ধীরে হত্যায় লিপ্ত আছে। সরকারের উচিত হবে, রাষ্ট্রযন্ত্রগুলোর দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি এই ধরনের অপরাধের যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে-এটির মনিটরিং ব্যবস্থা আরও জোরদার করা এবং ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে অপরাধীর মৃত্যুদন্ড বা যাবজ্জীবন কারাদন্ড বা ১৪ বছর কারাদন্ডের বিধান নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
শুধু খাদ্যে ভেজালের কারণে দেশে প্রতি বছর প্রায় ৩ লক্ষ লোক ক্যান্সোরে, ডায়াবেটিসে ১ লক্ষ ৫০ হাজার, কিডনি রোগে ২ লক্ষ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। এছাড়া গর্ভবতী মায়ের শারীরিক জটিলতাসহ গর্ভজাত বিকলাঙ্গ শিশুর সংখ্যা দেশে প্রায় ১৫ লক্ষ। কেমিক্যাল মিশ্রিত বা ভেজাল খাদ্যের কারণে পেট ব্যাথা, বমি হওয়া, মাথাঘোরা, বদ হজম, শরীরে ঘামের মাত্রা বেড়ে যাওয়া-কমে যাওয়া, এলার্জী, অ্যাজমা, চর্মরোগ, ব্রেইনস্ট্রোক, কিডনি ফেলিউরসহ মানবদেহে নানাবিধ সমস্যা সৃষ্টি হয় বলে মানববন্ধন থেকে জানানো হয়।
মানববন্ধন সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর, যুগ্ম সম্পাদক আলাউদ্দিন আজাদ।
সংগঠনের সভাপতি এম নূরুদ্দিন খানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও কলামিস্ট বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী, বিশিষ্ট আইনজীবী মাহবুবুর রহমান, বিএফইউজে’র নির্বাহী সদস্য খায়রুজ্জামান কামাল, সিনিয়র সাংবাদিক শরিফুল ইসলাম বিলু, বাকশালের মহাসচিব জহিরুল ইসলাম কাঈয়ূম, আসক ফাউন্ডেশনের পরিচালক শাহবুদ্দিন, সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি আজিজ মোল্লা, সহ-সভাপতি বোরহান উদ্দিন, শফিকুল ইসলাম পিন্টু, মোহাম্মদ ইলিয়াস, জাকির হোসেন, আকাশ খান, রশিদ ফলান প্রমুখ।